উপন্যাস পরিচয়। মুরাকামির উপন্যাস 'কাফকা অন দ্য শোর'। শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
হারুকি মুরাকামির উপন্যাস 'কাফকা অন দ্য শোর'
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়
১
হারুকা মুরাকামির "কাফকা অন দ্য শোর" এর প্রথম খন্ড কাল অতি গভীর রাতে শেষ করার পর অবিলম্বে দ্বিতীয় খন্ড শুরু করার ইচ্ছেথাকলেও রক্তের জোর আগের মত নেই ভেবে ক্ষান্ত দিলাম। বয়েস কাল হলে অবশ্য নিবৃত্ত হওয়া অসম্ভব ছিল।
এ এক আশ্চর্য কাহিনী। গল্প বয়নের পরাকাষ্ঠা। তিনটি গল্প চলছে সমান্তরাল ভাবে। এর একটা শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে। জাপানের এক প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলের বাচ্চারা গিয়েছিল কাছেই এক ছোট পাহাড়ে। তার আগে অনেক উঁচুতে প্লেনের মত কিছু একটা উড়ে গিয়েছিল। সেটা কি শত্রুপক্ষের বিমান? আর্মির কাছে তথ্য নেই। কিন্তু কিছু উড়েছিল তা অনেকেই দেখেছে।
বাচ্চাগুলি গিয়েছিল এক দিদিমনির সাথে। আচমকা বাচ্চারা এক এক করে মাটিতে ঢলে পড়ল। অজ্ঞান হল না, কিন্তু সম্মোহিতের মত পড়ে থাকল। পরে সুস্থও হলো। তাঁদের জীবনে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা গেল না। কিন্তু সুস্থ হলো না কেবল একটি বাচ্চা যে ছিল সব চাইতে প্রাণবন্ত। দীর্ঘ সময় চিকিৎসার পর একদিন জ্ঞান ফিরে এল তাঁর। দেখা গেল তাঁর স্মৃতি প্রায় লুপ্ত। তাঁর বুদ্ধিমত্তা মুছে গেছে। বাচ্চাটির নাম নাকাতা।
দ্বিতীয় গল্পে একজন পনের বছরের ছেলে বাড়ি থেকে পালানর জন্য তৈরি হচ্ছে। সময়কাল বর্তমান। ছেলেটির বাবা নামি ভাস্কর। ছেলেটির শৈশবে তাঁর মা ডিভোর্স নিয়ে আলাদা হয় তাঁর দিদিকে নিয়ে। তাঁদের আর দেখে নি সে। জানেও না কোথায় আছে। বাড়ি থেকে পালিয়ে সে ঘটনাক্রমে আশ্রয় পায় একটি লাইব্রেরিতে। এ ক্ষেত্রে লাইব্রেরির কর্মি মেয়েটি তাঁকে সাহায্য করে। মেয়েটি বয়সে একটু বড়। এই ধরনের মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হলে ছেলেটির মনে হত, তাঁর দিদি নয় তো! শেষাবধি অবশ্য ছেলেটার ফ্যান্টাসিতে দিদি কোনো ফ্যাক্টর হত না।
ছেলেটির নাম কাফকা। লাইব্রেরির অন্যতম কর্তৃপক্ষ হিসেবে সা একি সান- এর কথা কাফকা জানল। তাঁকে দেখল। সা একি সান কিশোরী বয়সে একটা গান লিখে সুর দিয়ে রেকর্ড করেছিলেন। সে রেকর্ড লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছিল জাপানে। কিন্তু আর কোনোদিন গান নি। তাঁর প্রেমিক ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে গিয়ে পড়েছিলেন। তাঁর নিজের দলের ছাত্ররাই তাঁকে ভুল করে পিটিয়ে খুন করে। (হ্যাঁ। এসব জপানেও হয়)
কারোর তেমন শাস্তি হয় নি। প্রেমিকটি এই লাইব্রেরিতে থাকতেন। এটা ছিল তাঁর পারিবারিক সম্পত্তিI সা একি সানা এখানেই থাকেন।
সা একি সানার সেই গানটার নাম ছিল "সমুদ্র সৈকতে কাফকা"।
তিন নম্বর গল্পে সেই নাকাতা ফিরে এসেছে। তাঁর বয়স হয়েছে। টোকিওর গভর্নর তাঁকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়। নাকাতাকে কেউ বুদ্ধিমান বললে সে প্রতিবাদ করে। বুদ্ধিমান হলে সে ভাতা কী করে পাবে? কিন্তু নাকাতা বেড়ালদের সাথে কথা বলতে পারে। হারিয়ে যাওয়া পোষা বেড়াল খুঁজে দিয়ে বাড়তি কিছু রোজগার হয়। সে পড়তে পারে না। জাপানে পড়তে না পারা লোক নেই বললেই চলে।
তিনরঙা একটা বেড়াল খুঁজছিল নাকাতা। আলাপ হলে সে বেড়ালদের একটা নাম দিত। তারা অবশ্য বলত নামের দরকার নেই। কিন্তু নাম না দিলে নাকাতা পড়ত সমস্যায়। তিনরঙা বেড়ালটার নাম সে দিয়েছিল গোমা। নাকাতার পরিচিত বেড়ালদের একজনের নাম মিমি। মিমিকে খুব ভালবাসে নাকাতা।
গোমাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। নাকাতাকে বেড়ালরা বলল একটা লোকের কথা। সে বেড়ালদের ধরে ঝোলায় পুরে নিয়ে যায়। নাকাতা তাঁকে খোঁজে। একদিন একটা বিরাট কালো কুকুর এসে তাঁকে বলে অনুসরণ করতে। এইভাবে নাকাতা পৌঁছয় একটা বাড়িতে। বাড়ির একমাত্র বাসিন্দাই হলো বেড়াল ধরা। তাঁর নাম জনি ওয়াকার।
জনি ওয়াকার বেড়ালদের ইনজেকশন দিয়ে অনড় করে দেয়। সেই অবস্থায় বেড়ালদের বুক থেকে পেট অব্দি চিরে হৃদপিন্ড বের করে এনে চুষে খায়। বেড়ালের কাটামুন্ডু রেখে দেয় ফ্রিজে। দশটা বেড়াল মারার পর আবার এক থেকে শুরু করে। এটাই সে করে আসছে আজীবন। সে ঝোলা এনে দেখায়। বলে, তার মধ্যে মিমি আর গোমা সমেত নাকাতার প্রিয় বেড়াল আছে। ইনজেকশন দেওয়া। নাকাতার সামনেই তাঁদের নির্মম ভাবে বুক চিরে কলজে চুষে খাবে। বেড়ালদের বাঁচাবার একটাই উপায়। জনি ওয়াকার বলে যে নাকাতা তাঁকে খুন করলেই বাঁচবে ওরা।
নাকাতা কী করে খুন করবে। কিন্তু চোখের সামনে প্রিয় বেড়ালদের ভয়ঙ্কর মৃত্যু ও জনি ওয়াকারের পৈশাচিকতা দেখার পর যখন মিমির পালা এল, নাকাতা ছুরির আঘাতে হত্যা করল জনি ওয়াকারকে। রক্তাক্ত জামা কাপড়ে মিমি আর গোমাকে নিয়ে বেরিয়ে এল। সে পুলিশকে বলেছিল হত্যাকাণ্ডের কথা। কিন্তু ছোকরা পুলিশের বিশ্বাস হয় নি। তা ছাড়া নাকাতার জামাকাপড়ে রক্তের কোন চিহ্ন দেখতে পায় নি সে পুলিশ। নাকাতা তদুপরি বলল, কাল মাছের বৃষ্টি হবে। পুলিশ ভাবল বুড়োর মাথা গেছে।
পরদিন সত্যিই আকাশ থেকে সার্ডিন মাছের বৃষ্টি হল। জানা গেল একজন ভয়ংকর ভাবে খুন হয়েছে। পুলিশটি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে অফিসারদের জানাল নাকাতার কথা। কিন্তু নাকাতা আর টোকিওতে নেই। জীবনে প্রথমবার সে টোকিওর বাইরে যাচ্ছে। বড়ো একটা ব্রিজের ওপারে তাঁর গন্তব্য।
এদিকে কাফকা কাগজে পড়ল তাঁর বাপের হত্যাকাণ্ডের খবর। কর্মচারি মেয়েটিকে (এরক্ষণে জানা গেছে সে মেয়েও নয়, ছেলেও নয়) বলল, তাঁর বাবা তাঁকে অভিশাপ দিয়েছিল। অয়দিপাউসের অভিশাপ। সে তাঁর বাবাকে খুন করে মায়ের সাথে মিলিত হবে। কাফকা একদিন কয়েক ঘন্টার জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। জেগে উঠে দেখে সে এক নির্জন পার্কে পড়ে আছে। গায়ে লেগে রক্ত। সে কি তবে স্বপ্নের মধ্যে বাবাকে খুন করে এসেছে?
সা একি সানার গানটা বাজিয়ে শোনে কাফকা। সেই রাতে লাইব্রেরিতে তাঁর ঘরে আবির্ভূত হয় এক কিশোরী। কাফকা বোঝে সেটা ভূত। কিন্তু জীবন্ত সা একি সানার কিশোরী বয়সের ভূত। জীবন্ত মানুষের ভূত হওয়ার গল্প সে জানে। কিন্তু "সমুদ্র সৈকতে কাফকা" গানটার সাথে তাঁর কী সম্পর্ক? সে গান তো লেখা হয়েছিল তাঁর জন্মের অনেক আগে!
এখানেই প্ৰথম খন্ড শেষ। গল্পের অতি সরল একটা আভাস দিলাম। মালুম হচ্ছে আজ রাতটা বোধহয় দু নম্বর খণ্ডের সৌজন্যে নির্ঘুম হবে।
২
মুরাকামির "কাফকা অন দ্য শোর" প্ৰথম খন্ড শেষ করার পর কিছু লিখেছিলাম। দ্বিতীয় খন্ড শেষ হয়েছে সদ্য। এ খন্ড নিয়ে কিছু বলে লেখাটা শেষ করি।
এই খণ্ডের গল্পের আভাস আগের মত দেওয়া যাবে না কারণ যারা পড়েন নি কিন্তু পড়বেন, তাঁদের সাথে প্রতারণা করা হবে। এই খন্ডে গল্প এগিয়েছে দুটো ধারায়। একদিকে নাকাতা, আরেক দিকে পনের বছরের বাড়ি পালান কাফকা। তৃতীয় ধারাটি আগের খন্ডে একটা সময়ের পর থেকে অদৃশ্য হয়েছিল। বাচ্চাদের সাথে থাকা শিক্ষিকার একটি স্বীকারোক্তি মূলক চিঠির মাধ্যমে। আমি ভেবেছিলাম তৃতীয় গল্পটি পরের খন্ডে আবার ফিরে আসবে। কিন্তু শেষ করার পর বুঝলাম ওটার দরকার ওখানেই ফুরিয়েছিল।
দ্বিতীয় খন্ডে নতুন একটি চরিত্র অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যার নাম হশিনো। (নামগুলোর উচ্চারণ ঠিক নাও করতে পারি) নাকাতা খুন করার পর যাচ্ছিল শিকাকুর দিকে। টোকিও থেকে একের পর এক গাড়িতে লিফট নিয়ে যাচ্ছিল। শেষবারের লিফট মিলেছিল ট্রাক ড্রাইভার হশিনো-র কাছে। কিন্তু সে নাকাতার সাথে থেকে যায়। দু জন মিলে খুঁজতে থাকে চ্যাপ্টা গোল পাথর। সেটা কোনো এক জায়গায় ঢোকার পথ খুলে দেবে। কোন জায়গা? সেটা বলা যাবে না।
রোদ্দুরে নাকাতার ছায়া কখনোই ঘন হয়ে পড়ত না। তাঁর ছায়া হত পাতলা। গোল পাথরের সাথে তাঁর ছায়ার গভীর সম্পর্ক আছে। কর্নেল স্যান্ডার্স বলে আরেক চরিত্র আসবে পাথর প্রসঙ্গে। সে সব জায়গায় সব রকম ভাবে থাকে। ইচ্ছে করলে সে হসিনোর মাথার কাছে এসে বসতে পারে। কিন্তু ঘাবড়ে দেওয়াটা তাঁর উদ্দেশ্য নয় বলেই হশিনোর বন্ধ ফোনে রিং করে। ফোন নিজেই অন হয়ে বাজতে শুরু করে।
বাবার অভিশাপ সফল করবেই যেন কাফকা। সানেকি, ওসিও (লাইব্রেরির সেই কর্মী) --- এই দুই নারী যেন তাঁর মা আর দিদি ---- অথচ দু জনের সাথেই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে কাফকা অটল। এক শ্বাসরুদ্ধকর অস্বস্তির আবহাওয়ায় পাঠককে নিয়ে যাচ্ছেন মুরাকামী।
জগতের সব কিছুই কি মেটাফর? সলিড এবং মেটাফরের জগৎ কি হাত ধরাধরি করে চলে? কাফকা নিশ্চিত এই ভেবে যে সানেকি তাঁর মা এবং তাই সে তাঁকে কামনা করে --- এটাও কি মেটাফর?
উপন্যাস সমাপ্ত হওয়ার পর ভূতগ্রস্তের মত লাগছিল। মনে হচ্ছিল জগতের একটি নয়, একাধিক স্তরে যাওয়া আসা ঘটেছিল পাঠক হিসেবে। কিন্তু এমন তো হয়! স্বরচিত ধারণার জগতে বাছাই করা মেটাফর নিয়ে মানুষ কি আজীবন একটি ভুল ধারনার সাথে বাস করে না?
নাকাতা, সানেকি, কাফকা, জনি ওয়াকার (যে চেয়েছিল বেড়ালের আত্মা দিয়ে বাঁশি বানাতে) ---- এঁদের পারস্পরিক সম্পর্ক কোন সূত্রে বাঁধা তা দ্বিতীয় খন্ডে অতি টান টান ভাবে ক্রমে ক্রমে স্পষ্ট করেছেন মুরাকামি। ভাল উপন্যাস পাঠককে জীবনের অস্বস্তিকর সত্যের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। যা এড়িয়ে যেতে চাই তার সামনেই টেনে আনে।
গুটি দশেক অপঠিত উপন্যাসের শেষ বই ছিল এটা। মুরাকামির লেখার সাথে পরিচয় ছিল। নরোজিয়ান উড পড়েছিলাম। আর একটা গল্প সংকলন। সে দুটো এবং লক ডাউনে পড়া বাকি নটা উপন্যাসও কেউ কারো চাইতে কম নয়। যে সব নিয়ে সুযোগ হলে লেখা যাবে।
রচনাকালঃ ২০২০
এই খণ্ডের গল্পের আভাস আগের মত দেওয়া যাবে না কারণ যারা পড়েন নি কিন্তু পড়বেন, তাঁদের সাথে প্রতারণা করা হবে। এই খন্ডে গল্প এগিয়েছে দুটো ধারায়। একদিকে নাকাতা, আরেক দিকে পনের বছরের বাড়ি পালান কাফকা। তৃতীয় ধারাটি আগের খন্ডে একটা সময়ের পর থেকে অদৃশ্য হয়েছিল। বাচ্চাদের সাথে থাকা শিক্ষিকার একটি স্বীকারোক্তি মূলক চিঠির মাধ্যমে। আমি ভেবেছিলাম তৃতীয় গল্পটি পরের খন্ডে আবার ফিরে আসবে। কিন্তু শেষ করার পর বুঝলাম ওটার দরকার ওখানেই ফুরিয়েছিল।
দ্বিতীয় খন্ডে নতুন একটি চরিত্র অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যার নাম হশিনো। (নামগুলোর উচ্চারণ ঠিক নাও করতে পারি) নাকাতা খুন করার পর যাচ্ছিল শিকাকুর দিকে। টোকিও থেকে একের পর এক গাড়িতে লিফট নিয়ে যাচ্ছিল। শেষবারের লিফট মিলেছিল ট্রাক ড্রাইভার হশিনো-র কাছে। কিন্তু সে নাকাতার সাথে থেকে যায়। দু জন মিলে খুঁজতে থাকে চ্যাপ্টা গোল পাথর। সেটা কোনো এক জায়গায় ঢোকার পথ খুলে দেবে। কোন জায়গা? সেটা বলা যাবে না।
রোদ্দুরে নাকাতার ছায়া কখনোই ঘন হয়ে পড়ত না। তাঁর ছায়া হত পাতলা। গোল পাথরের সাথে তাঁর ছায়ার গভীর সম্পর্ক আছে। কর্নেল স্যান্ডার্স বলে আরেক চরিত্র আসবে পাথর প্রসঙ্গে। সে সব জায়গায় সব রকম ভাবে থাকে। ইচ্ছে করলে সে হসিনোর মাথার কাছে এসে বসতে পারে। কিন্তু ঘাবড়ে দেওয়াটা তাঁর উদ্দেশ্য নয় বলেই হশিনোর বন্ধ ফোনে রিং করে। ফোন নিজেই অন হয়ে বাজতে শুরু করে।
বাবার অভিশাপ সফল করবেই যেন কাফকা। সানেকি, ওসিও (লাইব্রেরির সেই কর্মী) --- এই দুই নারী যেন তাঁর মা আর দিদি ---- অথচ দু জনের সাথেই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে কাফকা অটল। এক শ্বাসরুদ্ধকর অস্বস্তির আবহাওয়ায় পাঠককে নিয়ে যাচ্ছেন মুরাকামী।
জগতের সব কিছুই কি মেটাফর? সলিড এবং মেটাফরের জগৎ কি হাত ধরাধরি করে চলে? কাফকা নিশ্চিত এই ভেবে যে সানেকি তাঁর মা এবং তাই সে তাঁকে কামনা করে --- এটাও কি মেটাফর?
উপন্যাস সমাপ্ত হওয়ার পর ভূতগ্রস্তের মত লাগছিল। মনে হচ্ছিল জগতের একটি নয়, একাধিক স্তরে যাওয়া আসা ঘটেছিল পাঠক হিসেবে। কিন্তু এমন তো হয়! স্বরচিত ধারণার জগতে বাছাই করা মেটাফর নিয়ে মানুষ কি আজীবন একটি ভুল ধারনার সাথে বাস করে না?
নাকাতা, সানেকি, কাফকা, জনি ওয়াকার (যে চেয়েছিল বেড়ালের আত্মা দিয়ে বাঁশি বানাতে) ---- এঁদের পারস্পরিক সম্পর্ক কোন সূত্রে বাঁধা তা দ্বিতীয় খন্ডে অতি টান টান ভাবে ক্রমে ক্রমে স্পষ্ট করেছেন মুরাকামি। ভাল উপন্যাস পাঠককে জীবনের অস্বস্তিকর সত্যের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। যা এড়িয়ে যেতে চাই তার সামনেই টেনে আনে।
গুটি দশেক অপঠিত উপন্যাসের শেষ বই ছিল এটা। মুরাকামির লেখার সাথে পরিচয় ছিল। নরোজিয়ান উড পড়েছিলাম। আর একটা গল্প সংকলন। সে দুটো এবং লক ডাউনে পড়া বাকি নটা উপন্যাসও কেউ কারো চাইতে কম নয়। যে সব নিয়ে সুযোগ হলে লেখা যাবে।
রচনাকালঃ ২০২০
Comments
Post a Comment